ধামরাই

আশুলিয়ায় ইয়াবা-হেরোইন জব্দসহ আটক ৩

আগের সংবাদ

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হামলায় মৃত্যুশয্যায় ব্যবসায়ী

পরের সংবাদ

ইউনিয়ন পরিষদে টর্চার সেল, এ কেমন বর্বরতা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত :১২:১৩ পূর্বাহ্ণ, ৩০/১১/২২

ঢাকার ধামরাইয়ে চলমান বিচার থেকে উঠিয়ে নিয়ে এক সংখ্যালঘুকে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে এক ইউপি সদস্যসহ ইউনিয়ন পরিষদের নিরাপত্তা প্রহরীরা। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

এর আগে রবিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে ধামাইয়ের সুয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে এ বর্বর নির্যাতন চালানো হয়।

ভুক্তভোগী হলেন- ধামাইয়ের সুয়াপুর ইউনিয়নের আটানি পাড়া এলাকার শুক্কু মনি দাসের ছেলে বকুল চন্দ্র মনি দাস (৪৫)।

অভিযুক্তরা হলেন- সুয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার শফিক মিয়া (৬০), সুয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার আব্দুর রহিম (৫৫), চৌকিদার নবা (৪৮) ও ফজল। এছাড়ও একই এলাকার কার্তিক মনিদাস (৪৫), কুশি চন্দ্র দাস (৪৫) ও কালি চরণ মনি দাস (৪০)। তারা সবাই মাদক সেবী ও বিক্রেতা বলে জানা যায়।

এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বকুল চন্দ্র মনিদাস স্থানীয় শেফালী মনি দাস নামের একজনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হলে স্থানীয় মেম্বারকে বিষয়টি জানান।  পরে তারা বিচার করে দিবেন বলে দিন ধার্য করেন। বিচারের ধার্যকৃত দিন রাতে বিচারের মধ্যে তাদেরকে এলাকা থেকে বিতারিত করার পায়তারা করেন স্থানীয় মেম্বার শফিক মিয়া। পরে স্থানীয়দের বাধার মুখে তাকে এলাকা থেকে বিরাতিক করতে না পেরে চলমান বিচার সভা থেকে তাকে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখে। পরে দফাদার আব্দুর রহিম ও চৌকিদার  নবা ও ফজল হক মিলে তাকে মধ্যযোগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। এ সময় অভিযুক্তা তার নিকট ২০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন।   তিনি এত টাকা দিতে পারবেন  না মর্মে জানালে তাদের নির্যাতনের বর্বরতা বেড়ে যায়। এ সময় তারা তাকে মারতে মারতে ২/৩ বেতের লাঠি ভেঙ্গে ফেলে।

এতেও ক্ষান্ত হয়নি টাকা লোভী দফাদার আব্দুর রহিম ও চৌকিদার  নবা ও ফজল হকের, তারা তাকে মাটিতে থুথু ফেলে ফেলে সেই থুথু তাকে দিয়ে চাটতে বাধ্য করেন। এছাড়াও ইউনিয়ন নামের এই র্টচার সেলের মালিকরা তার বউকে মা সম্বোধন করার জন্য বেধড়ক মারপিট করে। পরে এত অত্যাচার সহ্যকরতে না পেরে তাদেরকে ৫ হাজার টাকা দেন। পরে তারা ভুক্তভোগীর বাবাকে খবর দিয়ে এনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শেষে তাকে নিয়ে যেতে বলেন। পরে তার বাবা তাকে নিয়ে স্থানীয় এক ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিৎিসা দেন। সামর্থ্য না থাকায় তাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারেনি তার পরিবার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি আশুলিয়া এক্সপ্রেসকে বলেন, আমরা যতদুর শুনেছি বর্তমান চেয়ারম্যানের ছেলে আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে। মূলত তারে ছাড়া এই ইউনিয়নের একটি কাজও হয় না। বিষয়টি সবাই জানেন যে, তার বাবা নির্বাচিত হলেও ইউনিয়ন পরিষদের সব কাজ তিনিই করে তাকে। অথ্যাৎ তিনি একজন স্বঘোষিত চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বকুল চন্দ্র মনিদাস বলেন, আমি এ বিষয়ে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি এর বিচার চাই।

অভিযুক্ত দফাদার আব্দুর রহিম বলেন, হিন্দু ধর্মমতে বিয়ে না করায় তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ওকে দেখে যেন অন্যরা শিক্ষা গ্রহণ করে। এ ধরনের কাজ যেন আর কেউ করতে সাহস না পায়।

এ ব্যাপারে ধামরাই থানার উপ-পরির্শক (এসআই) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শফিক মিয়া বলেন, আমি কাউকে মারিনি, শুনেছি চৌকিদাররা মেরেছে। সে জন্য আমি তাদের সাথে রাগারারি করেছি।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কফিল উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমার কাছে কোনো কিছু জানান নি।