সাভারে আন্তঃজেলা ট্রাক চোরচক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

কেমন আছেন সাভারের নারী শ্রমজীবীরা

পরের সংবাদ

নগ্ন ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি, মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৩

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :১২:০৭ অপরাহ্ণ, ০৮/০৩/২৩

সাভারের আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাসহ ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত এক ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১১টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।

এরআগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা মোছাঃ মায়া থাতুন (৩৭), শিমুল বিশ্বাস (৪৩) ও মোঃ মোক্তার শেখ (৫০)। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।

র‌্যাব জানায়, গত ৬ মার্চ মোঃ রুমন হোসাইন নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে, ওই দিন বেলা ৩টার দিকে তার আক্তার আলী বিশ্বাস তাদের বাসা আশুলিয়া হতে জিরাবো ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। এর কিছু সময় পর তারা তার বাবার ফোনে বন্ধ পায়। পরে ফোনে না পেয়ে তার ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খোঁজ নিয়েও কোন সন্ধান পায় না। ওইদিন সন্ধ্যায় অপহৃতর ব্যবহৃত ফোন হতে তার ছেলে অভিযোগকারী মোঃ রুমন হোসেনকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায় যে, নিখোজ মোঃ আকতার আলী বিশ্বাস তাদের নিকট আটক আছে। তারা অপহৃতোর নগ্ন ছবি তুলে রেখেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এক লক্ষ টাকা না দিলে তারা ভিকটিমের নগ্ন ও আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে, এমনকি টাকা না পেলে অপহৃতকে হত্যার হুমকি দেয়।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে, র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। একই সাথে আটককৃত আসামিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় যে, তারা আশুলিয়া থানাধীন ধলপুর এলাকায় ভুক্তভোগীসহ অবস্থান করছে। পরে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ৭ মার্চ র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়ার ধলপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের হেফাজত থেকে অপহ্নত বুক্তভোগীকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়।

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামীরা জানায় যায় যে, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে কাজ করে আসছিল। প্রথমে এই চক্রের কয়েকজন মিলে সুনির্দিষ্ট টার্গেট ঠিক করে। টার্গেট ঠিক করে একজন মহিলার মাধ্যমে তার সাথে মিথ্যা সুসম্পর্ক তৈরীর একপর্যায়ে মহিলা ভুক্তভোগীকে তার সাথে দেখা করার জন্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে ডেকে আনে। তারপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে, ওৎ পেতে থাকা অপরাপর সহযোগীদের কাছে দেয়। এক পর্যায়ে তারা ভিকটিমকে উলঙ্গ করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। তারপর ভিকটিমের ফোন দিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে ফোন দিয়ে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে ও একই সাথে ভুক্তভোগীকে লাঠি দিয়ে প্রহার করে পরিবারকে শোনায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী তার আত্মসম্মানের ভয়ে ও পারিবারিক মর্যাদার কারণে গোপনে মোটা অংকের টাকা দেয়।

র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।