ঈদে আসছে 'মাসুদ ভালো হয়ে যাও'

আগের সংবাদ

ইউটার্ন নিতে গিয়ে মোটরসাইকেল চালক নিহত

পরের সংবাদ

ধর্ষণের ঘটনা মিমাংশার চেষ্টা, এসআই ক্লোজ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

প্রকাশিত :১১:২৬ অপরাহ্ণ, ১২/০৪/২২

আশুলিয়ায় ধর্ষণের ঘটনায় বিবাদীর সাথে আতাত করে সেই ধর্ষণের ঘটনা থানায় বসে আড়াই লাখ টাকায় আপস মীমাংসা করে ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এসআই এর বিরুদ্ধে। ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী নারী এমন অভিযোগ তুলেছেন।

জানা গেছে মো. ফরিদুল আলম নামের পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে প্রাথমিক ভাবে আশুলিয়া থানা থেকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় স্থানীয় সাকিব ভূইয়ার(২৮) বিরুদ্ধে এক পোশাক শ্রমিক নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। অভিযুক্ত সাকিব ভুইয়া আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার শাহ আলম ভুইয়ার ছেলে। তিনি ঘোষবাগে ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন।

জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই পোশাক শ্রমিক নারী আশুলিয়া থানায় শাকিবের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ করলে সেই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পরে থানার এসআই মো. ফরিদুল আলম এর উপর। পরে অভিযুক্তের সাথে আতাত করে আড়াই লাখ টাকায় ঘটনাটি মীমাংসা করেন তিনি।

পরবর্তীতে মীমাংসার পরেও সোমবার থানায় মামলা গ্রহণ করে আশুলিয়া থানা পুলিশ(মামলা নং-২৮)। এমনকি অভিযুক্ত সাকিব ভূঁইয়াকে অভিযান চালিয়ে সোমবার গ্রেফতারও করা হয়।

ভুক্তভোগীর এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৩-৪ মাস আগে তার দোকানে গিয়ে অভিযুক্তের সাথে পরিচয় হয় ভুক্তভোগীর। এরপরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। পরে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গত ৬ মার্চ সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে বিয়ের কথা বললে সেই নারীকে টালবাহানা করে ঘুরাতে থাকে ওই যুবক।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বলেন, এর আগেই এ ঘটনার মীমাংসা করা হয়েছিল। এসআই ফরিদ ও আরও কয়েকজন স্থানীয় লোক থানায় বসেই আমাকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করায়। তারা বলে মামলায় গেলে অনেক ঝামেলা অনেক খরচ, তুমি মীমাংসা করে নাও। এ বিষয়ে আমার আর কোন অভিযোগও ছিলনা। সেই টাকা থেকে আমার কাছে বিভিন্ন খরচাপাতির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে উপস্থিতরা। আমি ৪০ হাজার টাকা টেবিলের উপর রেখে দিয়ে চলে আসি। এরপর থেকে আমি আমার মত এলাকায় বসবাস করে আসছিলাম। আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে

আমি এ বিষয়ে আর কোন পদক্ষেপ নিতে চাইনি। কিন্তু হঠাৎ করে এসআই ফরিদ আমাকে ফোন দিয়ে বলে, বোন আমার চাকরিটা বাঁচাও। তুমি থানায় এসে একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে যাও। পরে আমাকে থানায় নিয়ে মামলা গ্রহণ করে। আমি যখন মামলা করতে চেয়েছি তখন আমার মামলা নেয়া হয়নি। আর পরে আমি যখন সব ভুলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চেয়েছি তখন আমাকে এই পথে আনা হল। আমাকে হেনস্তা করা হয়েছে। আমি সাকিবকে এখনো ভালবাসি তাই আর চাইনি সে ঝামেলায় থাকুক। কিন্তু এখন তো তাদের পথে এসে আমাকে মামলা পরিচালনা করতে হবে। আমি তো এখন এসব চাইনি। আমি এ টাকা নিয়েও খুব অস্বস্তিতে আছি। আমি এ টাকা ফেরতও দিতে চেয়েছিলাম।

এ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা দাবি করে মঙ্গলবার(১২ এপ্রিল) এসআই ফরিদুল আলম বলেন, আজ থেকে আমি পুলিশ লাইনে সংযুক্ত আছি।টাকা পয়সা নিয়ে কোন মীমাংসা করা হয়নি। তাহলে কেন আপনাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার সিনিয়র কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, যেকোন সময় যেকোন পুলিশ বদলী বা ট্রান্সফার হতে পারে। এটা এ ধরণের বিষয় তো না। এ বদলী তার জন্য শাস্তিমূলক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না তো এটা শাস্তিমূলক বিষয় তো না। এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়।