আশুলিয়ায় মৎস ব্যবসায়ী সমিতির কমিটি গঠন

আগের সংবাদ

সাভারে নিখোঁজের ১০ ঘণ্টা পর কুমিল্লা থেকে শিশু উদ্ধার

পরের সংবাদ

তাজরীন গার্মেন্টসে নিহত শ্রমিকদের স্বরণে মোমবাতি প্রজ্জলন

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :৬:৫৮ অপরাহ্ণ, ২৩/১১/১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, আশুলিয়া:

তাজরিন গার্মেন্টস অগ্নিকান্ড দূর্ঘটনার ৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে ও ১১৩ জন নিহত শ্রমিকদের স্বরণে কারখানাটির সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের স্বজন ও বিভন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় জরাজীর্ণ তাজরিন ফ্যাশনের সামনে এই মোমবাতি প্রজ্জলন করেন তারা। এসময় ১১৩ জন নিহতের স্বরণে ১১৩ টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।

এর আগে কারখানাটির সামনে এক পথসভার করেন শ্রমিক নেতারা ৬ দফা দাবি জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা বিধানে শ্রমিকদের ঔক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

দাবিগুলো হলোঃ (১) তাজরিন ও রানা প্লাজাসহ সারাদেশের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ভাইবোন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আইএলও কনভেনশন ১২১ এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা আইন ১৮৫৫-এর ভিত্তিতে শ্রমিকদের সারাজীবনের আয়ের ক্ষতির ভিত্তিতে ও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আদালতের আদেশে প্রদত্ত ক্ষতিপূরণের বিবেচনায় ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। এ লক্ষে ক্ষতিপূরণের একটি জাতীয় মানদন্ড তৈরি করতে হবে।

(২) আহত ও ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

(৩) নির্মাণ, রাসায়নিক ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ ঝূঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্রসমূহ পরিদর্শনে দেশব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বা ঝটিকা পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং সবার জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে পরিদর্শন ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।

(৪) পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট ও বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সকল শ্রমিককে বীমার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

(৫) কর্মক্ষেত্রের সকল দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িত দায়ীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে দুর্ঘটনার অবহেলাজনিত বা অন্যান্য সকল কারন নিনর্য় করতে হবে এবং তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।

(৬) শ্রমিকসহ সকল মানুষের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।

এসময় শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি), বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, ২০১২ সালে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার তোবা গ্রুত পের তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেড এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিলো। এ ঘটনায় ১১৩ জন শ্রমিক জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান। অনেকে আবার জীবন বাঁচাতে লাফিয়ে পরে পঙ্গ হন। বাংলাদেশের ইতিহাসে পোশাক তৈরি কারখানায় অগ্নিকান্ডে একসঙ্গে এতো শ্রমিকদের হতাহতের ঘটনা এটাই প্রথম। যে কারণে এই দিন রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শোক পালনের পাশাপাশি সারা দেশের পোশাক কারখানা গুলোকে ছুটি ঘোষণা করা হয়।