বিএনপির মেম্বার প্রার্থীর উৎপাতে আ.লীগ প্রার্থীরা নাজেহাল

আগের সংবাদ

ধামরাইয়ে নদী দখল ও দূষণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

পরের সংবাদ

নৌকার মাঝি হলেন হত্যা মামলার আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত :১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, ০৬/১২/২১

সাভারে আওয়ামী লীগের এক সদস্যকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান চার্জশিট ভুক্ত আসামী পেয়েছে নৌকার মনোনয়ন। এতে করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এমনকি তৃনমুলের নেতাকর্মীদের মতামতের মূল্যায়ন না করেই পারভেজ দেওয়ানকে ইউপি চেয়ারম্যানের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এতে করে জনগণের সমর্থনে এগিয়ে থাকা প্রার্থীর নিকট বিতর্কিত নৌকা প্রতীক পাওয়া প্রার্থী বিপুল ভোটে হারবেন।

নিহতের আওয়ামীলীগের সদস্যের পরিবার অভিযোগ করে বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে দ্বন্দের জেরে চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের নির্দেশে আব্দুর রহিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রহস্যজনক ভাবে পুলিশ প্রধান আসামি চেয়ারম্যানসহ মূল ছয় আসামিকে বাদ দিয়েই অভিযোগপত্র দেয়। পরে সিআইডির তদন্তে চেয়ারম্যানসহ সব আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে তৎকালীন পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের নির্দেশে ইউপি আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুর রহিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার শফিউল আলম সোহাগসহ ১৫জন সরাসরি এই হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। পরে নিহতের ভাই যুবলীগ নেতা সুমন পন্ডি বাদী হয়ে ২৭জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

নিহতের ভাই সুমন পন্ডি বলেন, আমার ভাই পাথালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান পারভেজ চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষকে সমর্থন করতেন তিনি। পরে এরই জ্বের ধরে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার কয়েকমাস পরই চেয়ারম্যানের লোকজন প্রকাশ্যে আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তীতে পুলিশ চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করলেও হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। এরপর রহস্যজনক ভাবে পুলিশ আমার স্বাক্ষর ছাড়াই গোপনে প্রধান আসামি চেয়ারম্যানসহ ৬ আসামিকে বাদ দিয়ে চার্জশিট দেয়। পরে আদালতে আপত্তি জানালে সিআইডি দেড় মাস তদন্ত করে চেয়ারম্যানসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়।

পাথালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ হাওলাদার বলেন, পারভেজ দেওয়ান হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তাকে কিভাবে মনোয়ন দেওয়া হয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই । তবে আমরা তৃনমুল পরিবর্তন চেয়েছিলাম, আমাদের চাওয়ার মুল্যায়ন করা হয়নি।

৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘নিহত আব্দুর রহিম আওয়ামী লীগের সবচেয়ে সক্রিয় সদস্য ছিলো। তাকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে। এবারও পারভেজ দেওয়ান গতবারের মতোই পায়তারা করতেছে। হুমকি-ধামকি দিতেছে। আবারও কর্মীদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করতেছে। পারভেজ দেওয়ান নৌকার মনোনোয়ন পাওয়ায় আমরা আতঙ্কিত। তিনি তিনবারের চেয়ারম্যান হয়েও একটা নিজস্ব ইউনিয়ন পরিষদ ভবন করতে পারেননি। এখনো ভাড়া ভবনে চলছে সকল কার্যক্রম। উনি নির্বাচনে আসলে বিপুল ভোটে পরাজিত হবে।’
নৌকা প্রতীক পাওয়া পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, ‘মিথ্যা হত্যা মামলায় থানায় থেকে আমাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। পরে সিআইডির সাথে আতাত করে একমাসের মধ্যে তদন্ত না করে আমার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিপক্ষরা তাকে ফাসানোর জন্য ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে। এছাড়াও অনেক খোজ নিয়েই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ বলেন, হত্যা মামলার আসামীর বিষয়টা হয়তো মনোনয়ন বোর্ডের নজরে আসে নাই। বিষয়টি হয়তো তাদের জানাও নেই। তবে বিষয়টি সাধারণত ইউনিয়ন থেকে উপজেলা তারপর জেলা। ইউনিয়ন থেকে যেভাবে আসছে তাতে এ ধরনের কোন কিছু আমাদের জানানো হয়নি। যদি কেউ বলতো তাহলে হয়তো কেন্দ্রে আমরা বিষয়টা জানাতে পারতাম।

দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘মনোনয়নে কাজ করছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। সেখানে অনুমোদন দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্যদের কোন ভূমিকা নাই। এটা পার্লামেন্টারি বোর্ডের সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে আমার কোন কমেন্ট না করাই ভালো। সর্বোচ্চ জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত হইছে। ওনারা যাচাইবাছাই করেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে।