রাজশাহীর বাঘায় চা ২ টাকা ও পান ৩ টাকায় বিক্রি করে চলে আলমাজ আলী প্রামাণিকের ৪ সদস্যের সংসার। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে তিনি আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর গোচর ওয়ার্ডের মোড়ে চা ও পানের দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন।
আলমাজ আলী প্রামাণিক গোচর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে। আড়ানী রুস্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও গোচর গ্রামের বাসিন্দা মজবুল হোসেন লাল্টু বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে অবিশ্বাস্য হলেও আলমাজ এখনো এক কাপ চা ২ টাকা এবং এক খিলি পান ৩ টাকায় বিক্রি করছেন।
এ বিষয়ে আলমাজ আলী বলেন, ২০০০ সালে চা ও পান বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছি। ওই সময় ৫০ পয়সায় এক কাপ চা ও একই দামে পানের খিলি বিক্রি করতাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির হলে ২০০৫ সালে তা বাড়িয়ে চা ও পান ২ টাকায় বিক্রি করি। এভাবে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চলে। পরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আরও বাড়ার কারণে ২০১৬ সাল থেকে চা ২ টাকা ও পানের খিলি ৩ টাকায় বিক্রি শুরু করেছি।
পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১০ কাঠা ফসলি জমি আর ১০ কাঠা বাড়ির ভিটা পেয়েছি। এ ব্যবসা দিয়ে চার সন্তানের পরিবার নিয়ে ভালোভাবে খেয়ে-পরে চলে যাচ্ছে। বেঁচে থাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানোর আর ইচ্ছা নেই। এ ব্যবসা করে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ইংরেজি অনার্স মাস্টার্স শেষ করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করছেন। ছোট ছেলে অনার্স পড়ছেন। ২৩ বছর ধরে এ ব্যবসা করছে।
বিকাল হলে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসে। ইফতারের পর বেশি ভিড় হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ২৫০-৩০০ কাপ চা ও পান বিক্রি হয়।
আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর গোচর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নওশাদ আলী জানান, আলমাজের দোকানের চা অন্য দোকানের চেয়ে স্বাদে-গুণে কোনো অংশেই কম নয়। তার ২ টাকার চায়ের খবর অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে তার দোকানে চা ও পান খেতে আসেন।
