আশুলিয়া থানার নতুন ওসি মনিরুল হক ডাবলু

আগের সংবাদ

জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীয় নাগরিক পার্টির শ্রদ্ধা

পরের সংবাদ

আশুলিয়া থানার নতুন ওসি নিয়ে যা জানা গেল!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত :১:১৪ পূর্বাহ্ণ, ০৪/০৩/২৫

আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে যোগদান করলেন বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক ইনচার্জ মনিরুল হক ডাবলু।

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে  আশুলিয়া থানায় যোগদান করেন তিনি। এ সময় থানার অন্যান্য অফিসারগন তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

মনিরুল হক ডাবলু  ১৯৭৮ সালে রাজবাড়ীর জেলার গোয়ালন্দ থানার বাহাদুরপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন।

তিনি মরহুম আঃ জলিল শেখের তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ সন্তান।

মনিরুল হক ডাবলু এর বড় ভাই জিয়াউল হক বাবলু তিনি ব্যবসা ও সামাজিক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। মেঝো ভাই  জহিরুল হক লাভলু তিনি বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর এর কর্মচারী ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত সফল সভাপতি। মনিরুল হক ডাবলু শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাসের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু ২০০৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দান করেন।

অন্যদিকে, মনিরুল হক ডাবলু আশুলিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে একটি প্রত্যায়নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের একটি কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদের একটি প্রত্যায়ন পত্রেও ভাইরাল হয়।

এরপরেই দুইটি প্রত্যায়ন পত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে অনুসন্ধানে নামে টিম আশুলিয়া এক্সপ্রেস।

এ বিষয়ে প্রথমেই ছাত্রলীগের কর্মী দাবিকৃত প্রত্যায়নপত্রের সত্যতা নিশ্চিত করতে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্যদের সাথে নানা ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে কোনো ভাবেই তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সাদা চোখে দেখলেও প্রায় তিন বছর আগের ডিও লেটারের ঝকঝকে অনুলিপি, যা বিস্ময়কর,এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর নামের বানান,দুই জায়গায় দুই রকম(ছাপানো অক্ষরে লেখা মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু,সিলে লেখা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু, যা খুবই নিম্নমানের, কোন এমপি এমন মানের সিল ব্যবহার করার কথা নয়।) অথচ মনিরুল হক ডাবলু কে দেওয়া প্রত্যয়ন পত্র কয়েক বছর পরেও এখনো কতোটা তরতাজা!

পরে ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দাবি করা প্রত্যায়ন পত্রের অনুসন্ধান করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।

মনিরুল হক ডাবলুর রাজনৈতিক পরিচয় জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের সভাপতি একেএম মেজবাহ উদ্দীন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উনি আমার হল কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । আমরা এক সাথে রাজনীতি করেছি। তখন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাই, ডাবুল ও আমরা এক সাথে রাজনীতি করছি।

মনিরুল হক ডাবলুর ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, না, তার সাথে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি হলফ করে বলতে পারি ছাত্রলীগের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নাই।

 এ সময় মেজবাহ উদ্দিন আরও বলেন, ২০০১ সালে মহসিন হলের দখলে ছিল ছাত্রলীগের শফিকরা। তখন ডাবলু, আনিস, হিরু আমরা এক সাথে ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি। তখন আমাদের উপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি জেল খেটেছি। আরও অনেক অত্যাচার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্যের দেয়া ছাত্রলীগের প্রত্যয়ন পত্রের ব্যাপারে তিনি জানান, এ গুলো ভূয়া। আমি মহসিন হলের সভাপতি আমি ছাত্রদল করছি, ডাবলু ছাত্রদল করছে। সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন আমাদের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাই। আপনি উনাকে ফোন করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে সাবেক এই ছাত্রদল নেতা ও বর্তমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার পুরা পরিবারই বিএনপি। সে ফাস্ট ইয়ারে যখন হলে উঠে, তখন তারা ৪ জন বন্ধু ছিল। ছাত্রদলের লোক হিসেবে তখন তাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।

ছাত্রলীগের প্রত্যায়ন পত্রের ব্যাপারে তিনি বলেন, ওই প্রত্যায়ন পত্রটি কে বা করা বের করেছে, তা আমি জানি না। তার যে বন্ধু ছিলেন মহিদুল ইসলাম হিরু, সে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট হয়। আপনি তার সাথেও কথা বলতে পারেন।

এদিকে, মনিরুল হক ডাবলুর পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় অনুসন্ধান করে জানা যায়, উনার পিতা মৃত. আব্দুল জলিল মিয়া। যিনি প্রথমে ছিলেন ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমা শাখার জাগ দলের ও পরে বিএনপির সদস্য ছিলেন।

তার বড় ভাই মোঃ জিয়াউল হক বাবলু ছিলেন গোয়ালন্দ পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি এবং গোয়ালন্দ উপজেলা শাখা জাসাস এর সাবেক সভাপতি।

উনার মেঝ ভাই মোঃ জহিরুল হক লাভলু গোয়ালন্দ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি (১৯৯১-১৯৯৬ইং) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা যায়।

আশুলিয়া থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু বলেন- আমি কখন ছাত্রলীগের রাজনীতি করি নাই। এই জন্য আমাকে গত ১৫বছর অসংখ্যবার বদলি করছে, আমাকে নিভৃত করে রাখা হয়েছে। তবে আমি কোন দলের হয়ে নয় , দেশের সেবা করতে পুলিশে যোগ দিয়েছি।