সব
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারের আশুলিয়ায় সড়কে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর স্বশরীরে উপস্থিত থেকে হামলা চালিয়েছিলো হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা নাদিম। এ সময় সে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপাক মারধর করে।
শনিবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় এলাকায় এ হামলা চালানো হয়।
অভিযুক্ত নাদিম (২৭) আশুলিয়ার সুবন্দি এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। সে আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
প্রতিবেদকের হাতে আসা ১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার এসএ পরিবহনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য লোহার রড হাতে দাড়িয়ে আছে নাদিম। এ সময় তার সাথে থাকা কিছু ছাত্রলীগ নেতা একছাত্রকে আটক করে। পরে নাদিম দৌড়ে গিয়ে তাকে সোজরে লাথি মারে। এ সময় তার সাথে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই শিক্ষার্থী বেধরক মারপিট করে। পরে তারা সড়কের পাশে দোকানে দোকানে গিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়।
অন্য দিকে, ১৩ আগস্ট দৈনিক মানবজমিন প্রত্রিকায় ’যা ঘটেছিল আশুলিয়ায়’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সড়কে থাকা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর গুলি চালায় ছাত্রলীগ নেতা নাদিম হোসেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানায় শাহিন কবির নামে এক ব্যবসায়িকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় একটি মামলা সহ ঢাকার আশুলিয়া থানায় ইন্টারনেট ব্যবসা দখল নিতে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা ও মালামাল লুটের একটি মামলা রয়েছে।
গুলি করে হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন ছোট গোবিন্দপুর এলাকায় মোঃ শহিন কবির (২৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে অভিযুক্ত নাদিম ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসাঃ কামরুন্নাহার বাদী হয়ে নাদিমসহ ৪জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫/১৬ জনের নামে জয়দেবপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগটি তদন্তপূর্বক ২৬ আগস্ট একটি মামলা রুজু করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ।
ইন্টারনেট ব্যবসা দখল নিতে কর্মচারীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ১১ জানুয়ারী দুপুরে আশুলিয়ার সুবন্দি নতুন নগর এম.এস আলমাহি এন্টারপ্রাইজ ও জেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামক দুইটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জোর পূর্বক প্রবেশ করে অফিসের আসবারপত্রসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন ধরণের মেশিন ভাংচুর করে। এতে ওই অফিসের প্রায় ১১ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।
এ সময় অফিসের কর্মচারী সজিব (২০) বাধা দিলে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ ওসমান গনি বাদী হয়ে গত ১৭ জানুয়ারি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করে।
সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত নাদিমের মুঠোফোনে ফোন করা হলে সে জানায়, এখন তো দল ক্ষমতায় নাই, সেই অনেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে বলতেই তিনি ফোনটি কেটে দেন।
হত্যাসহ একাধিক মামলার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাদিমের মুঠোফোন নাম্বারে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।