সব
দেশের সবচেয়ে জনবহুল এলাকা শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া। সেই আশুলিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘পুলিশ’ ভুগছে যানবাহন সংকটে। মাত্র ২টি গাড়িতে চলছে থানার কার্যক্রম। তার মধ্যে একটির অবস্থা জরাজীর্ণ। যার ফলে গাড়ি সংকটে পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও বিঘ্ননতা ঘটছে।
আশুলিয়া ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভার উপজেলাধীন একটি থানা। যার আয়তন ১৪৮ বর্গ কিলোমিটারের বেশি। ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই থানা এলাকায় প্রায় ৩০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। যার অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ কাজের সন্ধানে এসে পাড়ি জমান এই শিল্পাঞ্চলে। তাইতো দেশের সবচেয়ে জনবহুল এলাকা এখন শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া। সেহেতু স্বাভাবিক ভাবেই এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশের কার্যক্রমও অনেক বেশি। বিপত্তিটা এখানেই, পুলিশ তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা জন্য যে জিনিস টা সবার আগে দরকার তা হচ্ছে গাড়ি। আর সেই গাড়ি সংকটে পড়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় ও থানা এলাকায় পুলিশের সাথে ছাত্র-জনতার ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্র-জনতার অনেকে গুলিবৃদ্ধ হয়ে আহত ও নিহত হয়। পরে ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে আশুলিয়া থানার ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর চালায় এবং থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে করে থানায় থাকা সকল গাড়ীসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও সরঞ্জাম পুড়ে যায়।
আন্দোলনের কয়েকদিন পর ধীরে ধীরে থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে থাকে। বর্তমানে থানার কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। তবে যানবহন সংকটের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রমেও ঘটছে বিঘ্ননতা। তাই থানার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পুলিশের ভরসা এখন রিকুইজিশন গাড়ি।
পুলিশের যানবাহন সংকট কিন্তু র্দীঘদিনের। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর এই সংকট আরও ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। বর্তমানে যা আছে তার অধিকাংশই পুরানো মডেলের লক্কর-ঝক্কর গাড়ি। এই অবস্থায় সংকট মোকাবিলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন মাহিন্দ্র কিংবা লেগুনা গাড়ি রিকুইজিশন করে পুলিশি দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েই ডিউটি পালন বা অভিযানে যান। অনেকে আবার ভাড়া গাড়িও ব্যবহার করেন।
আশুলিয়া থানার একাধিক উপ-পরিদর্শক (এসআই) এর সাথে কথা বলে জানা যায়, আশুলিয়া থানায় বর্তমানে দুটি গাড়ি রয়েছে। যার একটি থানার পরিদর্শক (ওসি) ব্যবহার করেন এবং অন্যটি ব্যবহার করেন থানার ডিউটি অফিসার। সুতরাং দেশের সবচেয়ে জনবহুল থানা এলাকায় যে কোন জরুরি মূহুর্তে পুলিশকে ভরসা করতে হয় রিকুইজিশন গাড়ির ওপর। থানার যে গাড়িটি কিলো ডিউটি অফিসার ব্যবহার করেন, সেটির অবস্থাও লক্কর-ঝক্কর বলে জানায় পুলিশ। তাই তাদের দাবি থানার কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে জরুরি ভিত্তিতে থানায় গাড়ির সংখ্যা বাড়াতে হবে।
গাড়ি সংকটের বিষয়ে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, সাভার- আশুলিয়াতে প্রায় ৭০ লক্ষ লোক রয়েছে। তার মধ্যে আশুলিয়াতে প্রায় ৪০-৪৫ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। আশুলিয়ার রাস্তাঘাটের যে অবস্থা তাতে যে কোনো জায়গায় যেতে হলে আমাদের অনেক সময় লাগে। তার মধ্যে থানায় গাড়ি হচ্ছে দুইটি। একটির অবস্থাতো জরাজীর্ণ। তাই এখন আমাদের ভরসা লেগুনা। লেগুনা, অটো বা বাইক-মোটরসাইকেল ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।
গাড়ির জন্য আবেদন করেছেন কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়ির জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। আমাদেরকে কিছু গাড়ি দেয়া হবে। তবে একটু সময় লাগতে পারে।