আশুলিয়ায় অটোরিকশা বাঁচাতে চালক নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা

আগের সংবাদ

সাভারে লেগুনা চাপায় শিশু নিহত

পরের সংবাদ

আশুলিয়ায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের তিনসদস্য আটক, পিস্তল, গুলি, মাদক উদ্ধার

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :১:০০ অপরাহ্ণ, ০৪/০৭/১৭

এক্সপ্রেস প্রতিবেদক:

আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি আন্তঃজেলা বাস ট্রাক ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি, ১৮০ পিস ইয়াবা, ডাকাতি করা তিনটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার ভোর রাতে নয়ারহাট এলাকার বিভিন্ন স্পটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতার কৃতরা হলো-১) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার আদিত্যপুর গ্রামের জনিক মিয়ার ছেলে ফকরুল কবির শান্ত (২৩)। সে বর্তমানে সাভারের শাহীবাগ এলাকায় তালুকদার ভিলায় ভাড়া থাকে। ২) কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার কায়ামারিয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে অনিক ইসলাম হৃদয়( ২৩)। সে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া জনৈক মুজিবের বাসায় ভাড়া থাকতো। ৩) সাভারের রাজফুলবাড়িয়া (নগর চর) গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলু(১৯)।

র‌্যাব -৪ এর নবীনগর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর আব্দুল হামিদ জানান, গত ২২ মে ভোর রাতে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় একটি ফিলিং স্টেশনে পাকিং করা একটি বাস ১৫/১৬জন ডাকাতি করে। পরে বাসের মালিক শামীম, হেলাপার সজনকে হাত পা বেধেঁ গাড়ির সিটে ফেলে রাখে ডাকাত সদস্যরা। পরে চন্দ্রা, নীনগর, মির্জাপুর থেকে যাত্রী তুলে তাদের জিম্মি করে ডাকাতি করে । এসময় তারা ঈশ্বরদী থানায় পাশে যাত্রী তুলে ডাকাতির সময় গাড়ির চালক ও হেলপার কৌশলে জানালা দিয়ে ডাকাত বলে চিৎকার করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এঘটনায় কয়েক জন ডাকাতকে আটক করলেও বাকীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের পর প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকায় নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালানো হয়। পরে সেখান থেকে তিনজকে একটি বিদেশী পিস্তল, ৬রাউন্ড গুলি, ১৮০ পিস ইয়াবা, তিনটি মোবাইল ফোন সহ গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আন্তঃজেলা ডাকাত সদস্যরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া ২৫/২৬ জনের একটি চক্র রয়েছে। তারা মহাসড়কের পাশে পাকিং করা বাস ট্রাক ট্রার্গেট করে চালক, হেলপার দের জিম্মি করে ডাকাতি করে। এছাড়া তারা বাসের চালক, হেলপারদের মারধর, হাত,পাঁ, মুখ বেধেঁ পিছনের সিটে ফেলে রেখে নিজেরাই গাড়ি চালিয়ে যাত্রী উঠা নামা করে। পরে সুযোগ বুঝে নিরিবিলি স্থানে নিয়ে যাত্রীদের সব কিছু রেখে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। শুধু তাই নয় নারী যাত্রীদের শ্লীতহানির মত ঘটনা ঘটায় তারা।

সম্প্রতি ঢাকা আরিচা মহাসড়কের বাস ছিনতাই করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা , অলংকার মোবাইল ফোন লুট করে মারধর, পিটিয়ে আহত করে এই চক্রটি। তাছাড়া কালিয়াকৈরের চন্দ্রা মোড় হতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ১৪/১৫ জন ডাকাত এসআই পরিবহনের পার্কিং করা একটি বাস নিয়ে বিভিন্ন জায়গা হতে যাত্রি উঠিয়ে মানিকগঞ্জের দিকে যায়। পথিমধ্যে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে যাত্রীদের কাছে থাকা নগদ টাকা, অলংকার ও মোবাইল সেট সহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয় চক্রটি। গত বছরের শেষের দিকে নবীনগর গলফ্ ক্লাবের বিপরীতে ভোরে রাঙ্গামাটি গামী শান্তি পরিবহনের একটি বাসকে ০২ টি মোটরসাইকেলে ৪/৫ জন ও একটি লেগুনাতে ৮/১০ জন ডাকাত মিলে বেরিক্যাড দিয়ে থামিয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে গাড়িতে উঠে যাত্রী এবং গাড়ীর স্টাফদের জিম্মি করে বাসের নিয়ন্ত্রন নিজেদের হাতে নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে গাড়িতে যাত্রী উঠায় এবং যাত্রীদের কাছে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণংলকারও মোবাইল সেট সহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় গাড়ীতে থাকা নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানী করে ডাকাত সদস্যরা।

এভাবে তারা ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নারায়ানগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা, বগুড়া সহ আস-পাশের জেলা সমূহে এ পর্যন্ত ৮০/৯০ টি ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে তারা। চক্রটির বাকী সদস্যদে আটকে জন্য অভিয়ান অব্যহত থাকবে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।