সব
চট্টগ্রামে চলতি বর্ষা মৌসুমেও চোখ রাঙাচ্ছে জলাবদ্ধতা। অল্প বৃষ্টিতেই সড়কে জমে যাচ্ছে পানি। মাত্র আধা ঘণ্টার বর্ষণে শনিবার সকালে পানিতে তলিয়ে যায় নগরীর কিছু নিচু এলাকার রাস্তা। পানি জমে যাওয়ায় ব্যাহত হয় যানবাহন চলাচল।
এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ওইসব এলাকার লোকজনকে। বিশেষ করে মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়কের একাধিক স্থানে পানি জমে যাওয়ায় দিনভর কাদাপানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে পথচারীদের।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সকালে প্রায় আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ বৃষ্টিতে পানি জমে যায় মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলাসহ কয়েকটি এলাকার সড়কে। বাসা থেকে বের হয়েই অনেককে সড়কে কাদাপানি দেখে থমকে যেতে হয়েছে। এ সময় যানবাহন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। কয়েকটি স্থানে জমে থাকা পানিতে টেম্পো, ট্যাক্সির মতো ছোট যানবাহন আটকে গেলে যাত্রীরা নেমে কাদাপানি ডিঙিয়ে ছুটেছেন গন্তব্যে।
মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়কের সংগীত এলাকায় বেলা ১১টার দিকে দেখা যায়, রাস্তার দুপাশেই পানি জমে আছে। ফলে দীর্ঘ যনাজটের সৃষ্টি হয়। এ রুটে চলাচলকারী বেশ কিছু টেম্পোর ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে খানাখন্দকে আটকে গেলে যাত্রীদের বিপাকে পড়তে হয়। যাত্রীরা জানান, নালানর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা জমেছে। এ কারণে অল্প বৃষ্টিতেই এ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
এ সড়কের মুরাদপুর মোড় পার হতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলার কারণে পুরো সড়কটিই বন্ধ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। এখানে দীর্ঘদিন খালের সংস্কার কাজ চলছে। বাঁধ দিয়ে কাজ করার কারণে খাল দিয়ে পানিপ্রবাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। মোড়ের দুপাশে নালার ওপর দিয়ে পারাপারের জন্য দুটি অস্থায়ী সরু রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে, যা পথচারীদের তুলনায় অপ্রতুল। একসঙ্গে অনেক লোক পার হতে গিয়ে প্রায়ই তৈরি হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি। এদিন বৃষ্টিতে এ দুটি পথের উভয় দিকে পানি জমে গেলে লোকজনকে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। এ সময় পথচারীদের অনেকেই জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন নগরীর একাংশের মানুষ ছাড়াও উত্তর চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিগামী হাজার হাজার মানুষকে যাতায়াত করতে হয়।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চউকসহ একাধিক সংস্থা। কিন্তু প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না নগরবাসী। বিভিন্ন খাল ও নালায় বাঁধ দিয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে। এতে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই খাল-নালা উপচে পানি উঠে যাচ্ছে সড়কে।