সব
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সরকারের ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) কর্মসূচির আওতায় ৫ কেজি আটার জন্য সকাল ৭টা থেকেই ব্যাগ হাতে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন শত শত নারী-পুরুষ। কিন্তু দীর্ঘ ৩-৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই খালি হাতে ফিরছেন। প্রতিদিন প্রায় ২০০-৩০০ নারী-পুরুষ লাইন ধরলেও বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা বেশি হওয়ায় অধিকাংশই আটা পান না।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শুধুমাত্র গোপালপুর পৌর এলাকায় খোলা বাজারে আটা বিক্রি হচ্ছে। ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহে পাঁচ দিন, প্রতিদিন দুইজন ডিলার ৫০০ কেজি করে মোট এক টন আটা বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি ২৪ টাকা দরে ৫ কেজি করে সর্বোচ্চ ২০০ জন ক্রেতা আটা কিনতে পারছেন।
তবে চাহিদা অনেক বেশি। গোপালপুর বাজার ও রেলগেট এলাকার দুইটি দোকানে একই চিত্র দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়ানো শত শত মানুষের মধ্যে অনেকেই ৪-৫ দিন ধরেও আটা সংগ্রহ করতে পারছেন না। কেউ কেউ ৬-৭ দিন ঘুরেও আটা পাননি।
মহিষবাথান গ্রামের আমিরন খাতুন, বিজয়পুরের সুকেদা বেওয়া, শিবপুরের সালমা খাতুন, ইউসুফ আলী এবং বৈদ্যনাথপুরের আফতার হোসেনসহ অনেকেই জানান, সকাল ৭টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও তারা প্রতিদিন হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। সুকেদা বেওয়া জানান, তিন-চার দিন ঘুরে আজ ৫ কেজি আটা পেলাম। কিন্তু অনেকেই পাচ্ছেন না।
একজন মুক্তিযোদ্ধাও লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেন, এর আগেও একদিন এসে আটা না পেয়ে ফিরে গেছি।
উপজেলা উপ-খাদ্য পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, সপ্তাহে ৫ দিন গোপালপুর পৌর এলাকার দু’টি জায়গায় খোলা বাজারে আটা বিক্রি হয়। আটা কিনতে আসা চার ভাগের এক ভাগ নারী-পুরুষও আটা কিনতে পারেন না।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আফরোজা পারভীন বলেন, গোপালপুর পৌর এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষের প্রয়োজনের অর্ধেক আটাও বরাদ্দ নেই। আটা কিনতে আসা বেশির ভাগ মানুষ হতাশ হয়ে ফিরছেন। আটা বিক্রির বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। তিনি জানান, বর্তমানে খোলা বাজারে চাল বিক্রি বন্ধ আছে।
সূত্র: ইত্তেফাক