আশুলিয়ার সেই রাজুর অন্যতম সহযোগী জলিল অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

অবরোধে গাড়ি চালাতেই মিলছে খাবার

পরের সংবাদ

নতুন মজুরিতে সন্তষ্ট শ্রমিক নেতারা, দাবি রেশন ব্যবস্থার

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :২:৩১ অপরাহ্ণ, ০৮/১১/২৩
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্ত করেছে শ্রম মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন পোশাক শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের জন্য রেশন ব্যবস্থাসহ বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যক্রম চালু করার দাবিও জানান।
বুধবার (০৮ নভেম্বর) সকালে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়। তবে শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতারা বলেন, পোশাকশ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্ত করায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। এতে সকল শ্রমিকরা খুশি। আমরাও খুশি। তবে আমাদের দাবি যে সকল কারখানায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার ভিতরে বেতন দেওয়া হয়। সে সকল কারখানায়ও যেন বেতন বৃদ্ধি করা হয়।
তারা আরও বলেন, আমরা এর আগেও দেখেছি, বেতন বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়িওয়ালারা তাদের ঘর ভাড়া বৃদ্ধি করে। তাই সরকারের নিকট আবেদন থাকবে সরকার যেন বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভুমিকা পালন করে। সেই সাথে শ্রমিকদের জীবন মানের ব্যয় কমাতে রেশন ব্যবস্থা করারও জোর দাবি জানাই।
শ্রমিকনেতা ইমন শিকদার বলেন, আজকে এই দেশে শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়ন একমাত্র এই সরকারই করে দিয়েছেন। দফায় দফায় বেতন বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমান মজুরিতে শ্রমিকরা অনেক খুশি, তারা উচ্ছাসিত। ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। উনি শ্রমিকের কথা চিন্তা করে  ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি দিয়েছেন।
শ্রমিকনেতা সরোয়ার হোসেন বলেন, আপনারা জানেন বেশকিছু দিন যাবৎ পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি নিয়ে কথাবার্তা চলছে। আমাদের মজুরি বোর্ডের সভায় প্রথমে মালিক পক্ষ ১০ হাজার ৪০০ টাকা বলেছিল। আমাদের শ্রমিকদের পক্ষ থেকে সেটা ২৩ হাজার টাকা বলা হয়েছিল। গতকাল শ্রমিকদের মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যদিও আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। কারণ হচ্ছে দ্রব্য মূল্যের পাশাপাশি সব ধরণের খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু আমরা বিগত মজুরি ও শিল্পের সক্ষমতা বিবেচনা করে বলবো যে এটা শ্রমিকদের জন্য মোটামুটি ভাবে একটু ভালো মজুরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই মজুরি তখনি সুফল দিবে যখন দ্রব্য মূল্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা এবং শ্রমিকদের জন্য রেশন  ব্যবস্থা করা হয়। যদি রেশন ব্যবস্থা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব শীগ্রই এটি বাস্তবায়ন করবেন। সেই বাসা ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
অন্যদিকে, আশুলিয়ার বিভিন্ন গার্মেন্টস কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারের নির্ধারিত মজুরীর যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তাতে শ্রমিকদের মাঝে রয়েছে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সকাল থেকে তারা ঢিলেঢালা কাজ করছে। কেউ কেউ মেনে নিলেও অনেকে মানতে নারাজ। তাদের দাবি দ্রব্যেমূল্যের যে অবস্থা তাতে এই বেতন যথেষ্ট নয়।
প্রসঙ্গেত, গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দেশের পোশাকশ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। তার মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পোশাক শ্রমিকদের জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। যা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী, পোশাক শ্রমিকরা ৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছিলেন। সেই হিসেবে আগের তুলনায় ন্যূনতম মজুরি বেড়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। মজুরি বৃদ্ধির হার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।