সব
‘ডাক্তার’ জোহরা আক্তার। রোগীদের গাইনি চিকিৎসা দিয়ে বেশ খ্যাতি ছড়িয়েছেন কুমিল্লার চান্দিনা ও দেবীদ্বারসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি অন্তত শতাধিক রোগী দেখেন তিনি। অন্য ডাক্তারদের তুলনায় ভিজিট কম হওয়ায় রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে বেশ।
প্রসূতি মায়ের চিকিৎসার পাশাপাশি নারীদের সব সমস্যায় রোগী ভিজিট, আল্টাসনোগ্রাফি, সন্তান প্রসব করিয়ে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন জোহরা আক্তার।
এ ছাড়া অনাকাঙ্ক্ষিত ভ্রুণ গর্ভপাত করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে ইতোমধ্যে কোটিপতি বনে গেছেন সনদহীন ওই চিকিৎসক।
সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনসংলগ্ন ‘মা-মনি মেডিকেল সেন্টারে’ গিয়ে দেখা যায় অনেক নারী রোগীর ভিড়।
তারা কার কাছে এসেছেন জানতে চাইলে তারা জানান, ‘আমরা জোহরা ডাক্তারের কাছে এসেছি’। দেখা যায়, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিচ তলার একটি কক্ষে রোগী দেখছেন জোহরা আক্তার। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর সাক্ষাৎ হয় তার সঙ্গে।
তিনি কোনো মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করেছেন এমন প্রশ্নে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ‘ডাক্তার’ হিসেবে তার নেই এমবিবিএস পাশের সনদ। ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে জানতে চাইলে তিনি দেখান কুমিল্লা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের একটি সনদপত্র। ওই সনদেও নেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর।
তার পরও তিনি ‘ডাক্তার’ লিখেন কীভাবে? এমন প্রশ্নে তিনি সোজাসাপ্টা উত্তর দেন, ‘আমার নামই ‘ডাক্তার’! ডাক্তার আবার নাম হয় কীভাবে? এমন প্রশ্নে তিনি বের করে আনেন নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্টকার্ড। সেখানে লেখা আছে ‘ডা. জোহরা আক্তার’!
জানা যায়, প্রাইভেট হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে ১৯৯৯ সাল থেকে কর্মজীবন শুরু করেন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার বাসিন্দা জোহরা আক্তার। ২০০২ সাল থেকে নিজেকে এমবিবিএস (গাইনি) চিকিৎসক দাবি করে শুরু করেন চিকিৎসাসেবা।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু এখন জেনেছি খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।