সব
বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র সন্তান শাহরিয়ার খান মাহিরের বয়স মাত্র ১৭ বছর। বাংলাদেশে ‘ও’ লেভেল শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য গত ৪ জানুয়ারি কানাডায় পাড়ি জমিয়েছিলো সে। কিন্তু কানাডার টরোন্টোতে গত সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। শেষ হয়ে যায় তার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন, ভেঙ্গে যায় তার বাবা-মায়ের আশা।
খোজ নিয়ে জানা যায়, সাভারের আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী শরীফ হোসেন খানের একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলো শাহরিয়ার। বড় দুই বোনের পরে ২০০৫ সালের ৩১ মার্চ শরীফ – মাকসুদা দম্পতির ঘরে জন্ম হয় তার। উত্তরার ডিটিএস-এসটিএস স্কুলের ইংরেজি মাধ্যম থেকে ‘ও’ লেভেল শেষ করেছিলো সে। প্রকৌশলী হবার স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিল কানাডায়। কিন্তু একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মাত্র ১৭ বছর বয়সে তার সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।
শাহরিয়ার খান মাহিরের ফুফু নাজমা খানম ঢাকা প্রকাশকে বলেন, মাহিরকে নিয়ে আমার ভাইয়ের অনেক আশা ছিল। ছেলেকে বড় ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চেয়েছিলো আমার ভাই। ওকে (মাহির) ভালো স্কুলে পড়ানোর জন্য আশুলিয়ার নিজের পৈত্রিক বাড়ি ছেরে উত্তরায় বসবাস করতেন। মাহিরকে নিয়ে নিয়ে ওর বাবা-মায়ের যে কত স্বপ্ন ছিলো। মূহুর্তের মধ্যে সবকিছু শেষ হয়ে গেলো।
তিনি আরও বলেন, শুনেছি, তার এক বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেয়ে আসার পথে দুর্ঘটনটা ঘটে। ঘটনাস্থলেই ও (মাহির) মাহির মারা গেছে।
উল্লেখ্য, কানাডার টরন্টোর স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এঘটনায় শাহরিয়ার খান মাহির এবং তার সাথে থাকা আরও একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। অন্য দুই জনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও একজনের। এ ঘটনায় বাংলাদেশের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। নিহত অন্য দুই শিক্ষার্থীর নাম অ্যাঞ্জেলা বারৈ ও আরিয়ান দীপ্ত।
টরন্টো পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, টরেন্টো নগরীর মিসিসাগা এলাকায় ৪২৭ হাইওয়ে ও ডানডাস ইন্টারসেকশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িতে থাকা চার জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা সবাই উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় এসেছিলেন। দুর্ঘটনার আগে নিবিড় কুমার গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়িটি খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে ওঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে গাড়িটি হাইওয়ের রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলেই গাড়ির দুই আরোহী মারা যান।