সব
মো. জামিল হোসেন:
প্রতি বছরের মতো এবারও পাখি সংরক্ষণে সচেতনা বাড়াতে আগামী ১৯ জানুয়ারি (শুক্রবার) ‘পাখিমেলা ২০১৮’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১৭তম এ পাখি মেলার আয়োজনের মূল দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘পাখি-পাখলি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ন’।
পাখিমেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান জানান এসব তথ্য দেন।
তিনি বলেন, প্রতিবার পাখি মেলা উপলক্ষ্যে যেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবারো এসবই থাকবে। তবে ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওর্য়াড’ নামে নতুন একটি ইভেন্ট এবারের মেলায় সংযোগ হতে যাচ্ছে। পাখি বা জীববৈচিত্রের ওপর গত এক বছরে পিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে যেসকল প্রতিবেদন হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করেই এ অ্যাওর্য়াড দেয়া হবে। রির্পোটগুলোর কপি আমারা চাইব। বিচারকদের রায়ের ওপর ভিত্তি করে দুইজনকে (প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া) এ অ্যাওর্য়াড দেয়া হবে।
এ ছাড়াও পাখির উপর সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন্সকে উৎসাহ প্রদান করার জন্য এবারের মেলায় ‘সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন্স’ নামে একটি অ্যাওর্য়াড দেয়ার ঘোষণা দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এসময় তিনি আরও বলেন, বন বিভাগের বরাবরের মতো এবারও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। বন বিভাগের ওয়াইল্ড ক্রাইম কন্ট্রোল বিভগের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা পাখিদের অবমুক্ত করে থাকেন। এবার কিছু পাখি যেন পাখিমেলায় অবমুক্ত করা হয় সে বিষয়ে আমারা তাদের অবহিত করে রেখেছি।
জাবির জিমনেসিয়াম সংলগ্ন জলাশয় পাখির অভয়আরণ্য ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে খ্যাতিমান এই বন্যপ্রাণি গবেষক প্রিয়.কমকে বলেন, বর্তমানে জিমনেসিয়াম সংলগ্ন জলাশয়টি অনেক পাখির আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। তাই এবারের পাখি মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট চাইব জলাশয়টা আর যাতে লিজ না দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জলাশয়টিকে পাখির অভয়আরণ্য হিসেবে যাতে ঘোষণা করার।
মেলায় যা যা থাকছে: আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা- প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি দলে চারজন ছাত্র-ছাত্রী থাকবে এবং দলের সঙ্গে একজন বিচারক দেয়া হবে। জাবি কাম্পাসে নির্ধারিত এক ঘণ্টা হেঁটে পাখি দেখে বা পাখির ডাক শুনে সঠিক নাম লিখতে হবে। অংশগ্রহণকারীদের নাম মেলার পূর্বে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে অথবা মেলার দিন প্রতিযোগিতা শুরুর আগে জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সকাল ৭:১৫ টার মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে।
শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা: স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা এ পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারবে। দুটি গ্রুপ থাকবে, ‘ক’ গ্রুপে নার্সারি থেকে তৃতীয় শ্রেণি এবং ‘খ’ গ্রুপে চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি। মেলার দিন জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সকাল ৮.৩০ টার মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে।
পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা: স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলে এ পর্বে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতা (অডিও-ভিডিও এর মাধ্যমে): ভিডিও দেখে এবং ডাক শুনে পাখির নাম বলতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি দলে দু’জন ছাত্র-ছাত্রী থাকবে। মেলার দিন সকাল ৮.৩০ টার মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে।
এ ছাড়াও থাকছে টেলিস্কোপ দিয়ে শিশু কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ। স্টল সাজানো প্রতিযোগিতা এবং সর্বশেষ পুরুষ্কার বিতরণ এবং সমাপনী অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, পাখি সংরক্ষণের গণসচেতনতা বাড়াতে ২০০১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ক্যাম্পাসে পাখি মেলা আয়োজন করে যাচ্ছে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও ওয়াল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার।