সব
মেহেদী হাসান শাওন
আশুলিয়ায় সাজ্জাদুর রহমান সাকিব (৪) নামের এক শিশুকে অপহরণ করার অভিযোগে গণধোলাই দিয়ে ভাড়াটিয়া এক দম্পতিকে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসি।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় আশুলিয়ার চাকলগ্রাম এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে শিশুটিকে অপহরণ করে ঐ দম্পতি। পরে শিশুটিকে দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দুরে উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলো- গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া বাঁশবাড়ি এলাকার ফরিদ মোল্লার মেয়ে পিয়া আক্তার(২২) ও তার স্বামী মাগুরা জেলার সালিথা থানাধীন শতখালি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে আলী হোসেন (২৭)। আশুলিয়ার চাকলগ্রাম এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া। এদিকে পিয়া অঅক্তার নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলো বলে জানান বাড়ির মালিক।
অপহৃত শিশুর পিতা আনোয়ার হোসেন বলেন, দুই মাস আগে আলী হোসেন ও তার স্ত্রী পিয়া তার বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নেন। সে সময় পিয়া নিজেকে একজন ডিবি পুলিশ হিসেবে পরিচয় দেন। তার স্বামী আলী হোসেন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এলাকায় কাজ করেন। ঘটনার দুই দিন আগে তারা ভাড়াটিয়া কক্ষটি ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। বুধবার তাদের চলে যাওয়ার কথা ছিল। সকাল সাড়ে ১০টায় তার ৪ বছরের শিশু পুত্র সাজ্জাদুর রহমান সাকিব, আল আমিন, ওয়াসিম, মাহিনুরসহ তার ৪/৫ জন খেলার সাথী একত্রে খেলা করছিল। এসময় পিয়া সাকিব ও আল আমিন নামের অপর এক শিশুকে জুস খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির বাহিরে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে আল আমিন ছুটে দৌড়ে চলে আসে।
সাকিবকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নিকটবর্তী কোহিনুর গেট সংলগ্ন স্টার্লিং গার্মেন্টস এর পাশে আনজুয়ারা বেগম নামে এক পোশাককর্মীর ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে পিয়া নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তার ছেলে কে গচ্ছিত রাখে এবং তার উর্ধ্বতন স্যার ফোন দিয়েছে তাই জরুরী কাজে থানায় যেতে হবে কিছুক্ষণ পর তাকে নেয়ার কথা বলে বাসায় চলে যান। সেখান থেকে বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়াকালে বাড়ির মালিক আনোয়ারের স্ত্রী সুইটি বেগম তার শিশু পুত্র কে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান। পরে পরিবারের সদস্যরা সাকিবের খোঁজে বের হয়ে ওর খেলার সাথীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায় সাকিব তার পুলিশ আন্টির সাথে গেছে।
ওদিকে ছেলে সাকিব অচেনা আনজুয়ারার বাসায় কান্নাকাটি করলে তিনি শিশুটির পরিবারের খোজ নেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তিনি মাইকে শিশু নিখোজের সংবাদ শুনতে পান। পরে জানতে পেরে শিশুটির পরিবার ও এলাকার লোকজন শিশুটিকে আনজুয়ারার কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে ডিবি পরিচয়দানকারি পিয়া ও তার স্বামী আলী হোসেনকে এলাকার লোকজন গনধোলাই দিয়ে থানায় সোপর্দ করে।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল বলেন, অপহরণকারীরা গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন, তাই তাদেরকে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।