সব
প্রতিবেদক: ফিরোজ আহম্মেদ চাঁদ
বাংলা ঋতু পরিক্রমায় আবার এসেছে শরৎ। এসেছে সাদা শুভ্রতার দিন। শরৎ দিনের শুরুর সকালটাই সিগ্ধ আলোয় ভরা। আর পরন্ত বিকালের আবেশ ছড়ানো রোদ সত্যিই মনকাড়া। শরতের সকালে দূর্বা ঘাসে জমে থাকা শিশির যেন এক একটা মুক্তার টুকরো। আহা সকালের সোনালী রোদ যখন শিশিরের গায়ে পড়ে তখন দূর থেকে দেখে মনে হয় ‘এ যেন আসিয়াছি হায় মুক্তার দেশে, আসিয়াছি আমি হায় এই বঙ্গকে ভালবেসে। এমন জীবন কোনকালে দেখিয়াছে কে কবে, শ্যামল ধরনী শরত্ প্রভাতে এসে।
শরৎ ঋতুর কথা মনে এলেই আমাদের চোখের কোণে ভেসে উঠে ফুটন্ত সাদা কাশফুল, পাল তোলা নৌকার সারি, দূর আকাশের কোণে জমে থাকা দূসর সাদা মেঘের ভেলার কথা। কখনো মিষ্টি রোদে আলোর খেলা আবার কখনো হঠাৎ বৃষ্টির হানা। মাঝে সাজেই দেখা যায় রৌদ্র মেঘের লোকুচুরি খেলা। অনুভুতির মাত্রাটা একটু গভীরে নিলে মনে হয় যেন আকাশের সব নীলে একাকার হয়ে জলের স্বচ্ছ বহমান ধারা ছুটে চলছে মোহনায়।
সেই অবিরত কল কল ধ্বনির এক টানা শব্দ বেজেই চলে পুরো শরৎ জুড়েই। এমন চলতে চলতেই ফুরায় এক সময় বয়ে চলা স্বচ্ছ জলের ধারা। তার দুপারে বেড়ে উঠা কাশ গুচ্ছ গুলোও ততদিনে যৌবনে পা রাখে। ঝিরি ঝিরি বাতাসে দুলতে থাকে তার সারা অঙ্গ। এমন অঙ্গের নাচন কার না ভাল লাগে। বিশেষ করে তরুণ মনের মানুষদের কাছে শরৎ সব থেকে সুন্দর ঋতু।
শরতের বিকেলে মনকে প্রফুল্ল করতে ঘুরে আসতে পারেন কাশবন থেকে। কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় এক স্নিগ্ধ বিকেল কাটাতে এবং নগরজীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে একটু শান্তির খোঁজে যেতে পারেন ঢাকার আশেপাশের কাশবনে।
জেনে নিন ঢাকা ও এর আশেপাশে কোথায় কোথায় পাবেন কাশবন-
বসুন্ধরা ৩০০ ফিট: কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচল যেতে হয় ৩০০ ফিট রাস্তা ধরে। এই রাস্তার দুই ধারেই রয়েছে অসংখ্য কাশবন। চাইলে হেঁটে হেঁটেই ঘুরে দেখা যায়। রিক্সা করেও ঘুরতে পারেন। সেক্ষেত্রে ঘন্টায় ১০০ টাকা করে ঠিক করতে পারেন রিকশা।
আফতাবনগর: রামপুরার বনশ্রীর আফতাবনগর প্রায় সকলের কাছে অতি পরিচিত জায়গা। ঢাকার যেকোনও প্রান্ত থেকে রামপুরা ব্রিজে নামলেই দেখা যাবে আফতাবনগর।
দিয়াবাড়ি: ঢাকার কাছে খোলা বাতাস খাওয়ার আরেক জায়গার নাম উত্তরা দিয়াবাড়ি। এখানেও প্রচুর কাশবন রয়েছে। উত্তরা হাউজবিল্ডিং নেমে লেগুনা কিংবা অটোরিক্সা নিয়েই যাওয়া যায় দিয়াবাড়ি।
বছিলা ব্রিজ: মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ সংলগ্ন বছিলা ব্রিজ যেতে রাস্তার দু’ধারে দেখা মেলে অসংখ্য কাশফুলের।
কেরানীগঞ্জ: বাবুবাজার বুড়িগঙ্গা সেতু অতিক্রম করে ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে ধরে যেতে থাকলে দেখা পাওয়া যাবে কাশবন। এখানে কাশবনের পরিমান এতই বেশি যে পুরো এলাকা কাশফুলে সাদা হয়ে থাকে।
কাশফুল বেশিদিন থাকে না, তাই কাশফুলের ছোঁয়া পেতে আজই চলে যান আপনার সুবিধা মতো যেকোনও জায়গায়।