আশুলিয়ায় জমি দখলের মামলায় জামায়াত নেতা গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

করোনা: মাস্ক-স্যানিটাইজার নিয়ে জনগণের পাশে আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগ

পরের সংবাদ

করোনার বিরুদ্ধে সাবান ও স্যানিটাইজার কতটা কার্যকর?

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :৯:৪৫ অপরাহ্ণ, ২৫/০৩/২০

স্বাস্থ্য ডেস্ক: দিনে অনেকবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে ক্লান্ত? হাত-আঙুল খসখসে হয়ে গেছে। না, তারপরও থামাবেন না হাত ধোয়া। এতে শুধু করোনাই নয়, হাত থেকে আরও অনেক ভয়ংকর ভাইরাস-ব্যাকটিরিয়া ধুয়ে যায়।

ভাইরালোজিস্টরা জানান, প্রায় প্রতি বছরই মানুষের দেহে চার ধরনের করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়। যাদের তিনভাগ মূলত ঠান্ডার কারণে ছড়ায়। কিন্তু মানুষকে মেরে ফেলে না।

আর এবারের সংক্রমণের ঘটনা তো নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছেন। এর থেকে বাঁচার জন্য সাবান, অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার ও গরম পানির কথা বারবার বলা হচ্ছে।

প্রশ্ন হলো সাবান ও গরম পানি আসলে কী করে? মাইক্রোস্কোপের নিচে দেখা গেছে করোনা একটি সর্পিল স্তর দিয়ে ঢাকা। যা মুকুটের মতো দেখতে হওয়ায় একে করোনা বলা হয়। এর নিচের স্তর লিপিড বা চর্বি দিয়ে তৈরি। এখন করোনাকে কল্পনা করুন একটা বাটার ডিশ হিসেবে, যার মধ্যে অনেক চর্বি রয়েছে। এই ক্ষেত্রে পরিস্কারের জন্য শুধু পানি ব্যবহারে কাজ হয় না। চর্বি তুলতে সাবানের প্রয়োজন হয়। একইভাবে সাবান দিয়ে যখন ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলেন করোনার লিপিড স্তরটি অকার্যকর হয়ে যায়।

এখানে সাবানের কাজটি মজাদার। এর অণুগুলো দেখতে অনেকটা বীর্যের মতো। যাদের লেজ ও মাথা থাকে। এর মাথা পানির সঙ্গে থাকলেও লেজের আকর্ষণ চর্বির প্রতি। অনেকটা যেন পানির ঝাপটা থেকে বাঁচার জন্য লেজটি চর্বি ধরে টানাটানি করে। এই সুযোগে চর্বিটিও আশ্রয়চ্যুত হয়। এক্ষেত্রে বারবার হাত ঘষে ফেনা তোলা ও পানি হাতকে পরিষ্কার হতে সাহায্য করে।আর ২০ সেকেন্ড? ঘড়ির দিকে না তাকিয়ে ‘হ্যাপি বার্থডে’ গানটির প্রথম লাইন দুইবার গেয়ে নিন। তাতেই চলবে।

অনেক সময় আমরা শুনি হাত ধুতে হবে গরম পানি দিয়ে। কিন্তু গরম পানিও অনেক ব্যাকটিরিয়া ও ভাইরাসকে মারতে পারে না। একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এটি সম্ভব হলেও হাতে ক্ষতি হতে পারে। অন্যদিকে ঠান্ডা পানি কাজ করলেও আপনাকে সাবানের ফেনা ঠিকঠাক তুলতে হবে। আর বাড়তি সাবধানতা হিসেবে ‘হ্যাপি বার্থডে’র প্রথম লাইন তিনবার গাইতে পারেন। আর হ্যাঁ, গরম পানিতেই ভালো ফেনা উঠে।

সাবানে যদি কাজ করে তবে অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার কেন? আসলে স্যানিটাইজার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পানি নেই এমন স্থানে ব্যবহার করা হয়। যদি ঠিকঠাক ব্যবহার করা হয় এটি সাবানের মতো কার্যকর।এর মধ্যে যদি কমপক্ষে ৬০ ভাগ অ্যালকোহল থাকে তবে ভাইরাস মারতে পারবে।

এই ক্ষেত্রে শুধু এক ফোটা নিয়ে হাতে তালুকে ঘষলে হবে না। ভালো করে ও যথেষ্ট পরিমাণে স্যানিটাইজার নিয়ে হাতের তালু, পেছনে, আঙুলের মাঝে ও নখে ঘষতে হবে।

জীবাণুর মেমব্রেনকে ভেঙে দিয়ে এর ক্ষতি থেকে রক্ষা করে অ্যালকোহল। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ- সাবান ও পানি হাতের কাছে থাকলে স্যানিটাইজার ব্যবহারের দরকার নেই। কারণ জীবাণু নিরোধ করতে এই দুটোই ভালো কাজ করে।অ্যালকোহল জীবাণুকে মেরে ফেলে কিন্তু হাত তো ধুয়ে দেয় না। যদি কেউ তার হাতে হাঁচি দেয় তারা ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাসকে অকার্যকর করতে অনেক অ্যালকোহল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু হাত যদি গুরুতর দূষিত হয় তখন সাবানই ভালো। তবে হেপাটাইটিস এ ভাইরাস, পোলিও ভাইরাস, মেনিনজাইটিস ও নিউমোনিয়ার ব্যাকটিরিয়া কিন্তু নরম-সরম বা চর্বিযুক্ত নয়। সে ক্ষেত্রে স্যানিটাইজার বেশ কাজে দেয়।

আর এই করোনার দিনে আপনি যখন সাবান ঘষে ঘষে হাতে ফেনা তুলছেন- তখন গর্বিতই হতে পারেন। হয়তো মহামারির জীবাণুটিকে এক্ষুণি ধ্বংস করে নিজেকে ও অনেককে বাঁচালেন।

সিএনএন অবলম্বনে