আশুলিয়ায় শীতের পিঠা উৎসবে মেতেছে শিক্ষার্থীরা

আগের সংবাদ

আশুলিয়ায় কার্টন ফ্যাক্টরিতে আগুন

পরের সংবাদ

তীব্র শীতে থেমে নেই আশুলিয়ার শ্রম বিক্রির হাট

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :৮:১০ অপরাহ্ণ, ২২/১২/১৯

হাসান ভূঁইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক:

তীব্র শৈত্য প্রবাহ উপেক্ষা করে, কাক ডাকা ভোরে বাঁশের ঝাকা আর কোদাল হাতে শ্রম বিক্রির হাটে হাজির আশুলিয়ার ষাটোর্ধ আব্দুর রহমান। দিন মুজুরের কাজ পেতে গত ৫ বছর ধরে এভাবেই নিয়মিত আসছেন তিনি। কাজের সন্ধানে সাঁত সকালে শ্রমিকের এমন হাট গুলো দিনমজুর বা কামলার হাট নামে পরিচিত।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আশুলিয়ার জিরাবো, নরসিংহপুর, ছয়তলা, নবীনগর, ইপিজেড ও জিরানীসহ ৮টি স্থানে এভাবেই চলছে শ্রমের হাটে মনুষ বেচা-কেনা। নিয়মিত হাট বসলেও এ হাটে নেই কোনো খাজনা বা হাট কমিটির চাঁদাবজির ঝামেলা, নিজের আপন গতিতেই চলছে এই হাট, এদিক থেকে কিছুটা শান্তিতে থাকলেও কাজের নিশ্চয়তা ও জীবনের নিরাপত্তা একদম অনিশ্চিত।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকার মেইন গেটের বাহিরে এমনই চিত্র দেখা যায়। মানুষের হাটের এই বেচাকেনা চলে ভোর ৬টা হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত।

প্রাচীনকালে ও মধ্যযুগে সমাজে মানুষ কেনাবেচার হাট বসলেও সেই দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগেও ক্ষুধা আর দারিদ্যেতার নির্মম আঘাতে নিন্ম আয়ের মানুষগুলো দু’বেলা রুটিরুজির জন্য আজও নিজেকে বিক্রি করেন মানুষের হাটে।

এ সকল হাটে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি ও দিনমুজুরসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবি মানুষের সরগম হয়ে ওঠে। শ্রমের এই হাটে শ্রমিক কিনতে আসেন অনেক প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার ও মালিকরা। শ্রমের হাটে আসা অনেকে বিক্রি হলেও কিছু থেকে যান অবিক্রিত। দামদর শেষে যারা বিক্রি হন তারা রওনা হন মালিকের গন্তব্যে। সারাদিন ঘাম ঝরানো কঠোর পরিশ্রমে শেষে সন্ধ্যা বেলায় বাসায় ফেরে যান এই পরিশ্রমী মানুষগুলো। আবার পরে দিন ভোর বেলায় হাটের আসার পালা। এভাবেই চলছে পরিশ্রমী মানুষগুলোর জীবন।

শীত উপেক্ষা করে হাটে আসা দিন মুজুর আল-আমিন জানান, তিনি আগে গার্মেন্টস চাকরী করতেন, চাকরী না থাকয় বাধ্য হয়ে মানুষের হাটে নিজেকে বিক্রি করতে এসেছেন। তাও মাঝে মাঝে কাজ পেলেও বেশির ভাগ সময় তিনি নিজেকে বিক্রি করতে পারেন না।

আজিজুল ইসলাম (৫৫) জানান, ১০ বছর ধরে তিনি এভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন, সারাদিনের জন্য নিজেকে ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করেন যেকোন কাজের জন্য। কাজ পেলে মুখে হাসি ফুটে, না পেলে মলিন মুখে অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তি দিনের জন্য।

এদিকে এ সকল হাটে নারী শ্রমিকও ছিলো চোখে পড়ার মত, যারা সারাদিন রাজমিস্ত্রীর যোগানদাতা বা বাসাবাড়ির কাজ করার জন্য নিজেকে ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি করেন ।