সাভারে অস্ত্র ও গুলিসহ ইউপি সদস্য আটক

আগের সংবাদ

নিজেরাই ধুয়ে মুছে শহীদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানালেন সাংবাদিকরা

পরের সংবাদ

সাভার হানাদার মুক্ত দিবস আজ

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :৭:৪২ পূর্বাহ্ণ, ১৪/১২/১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার: আজ ১৪ ডিসেম্বর সাভার হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সারাদেশের মত মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়েছিলেন এখানকার প্রায় আড়াইশ নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা। এদিন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর টিটোর আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে হানাদার মুক্ত হয় সাভার।

শহীদ গোলাম দস্তগীর টিটোর মানিকগঞ্জ জেলার সেওতা গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। মহান মুক্তিযুদ্ধে টিটোর ভাই তোজোও শাহাদৎ বরণ করেন।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বর্ণনা মতে, ভারতের অন্তিম নগর হতে ২নং সেক্টরের অধীনে ৫২ জন গেরিলা আশুলিয়ার গাজীবাড়ী এলাকার নেঁদু খার বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করেন। এ সময় দেড় মাস প্রশিক্ষণ দেয়া হয় কয়েক শতাধিক নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে। পরে মুক্তিযোদ্ধারা আশুলিয়ার তৈয়বপুর ক্যাম্পে বিশিষ্ট চলচিত্রকার নাছির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নেতৃত্বে আরও একটি ক্যাম্প তৈরি করে।

ক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে ১৪ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ ও টাঙ্গাইল হতে পাকবাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে সাভার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় ১৪ ডিসেম্বর সকালে আশুলিয়ার ঘোষবাগে পাকবাহিনীর একটি সশস্ত্রদল অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নেতৃত্বে দুইশ ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা ঘোষবাগ এলাকার শ্রীগঙ্গা কাঁঠালবাগানে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়।

দীর্ঘ সময় যুদ্ধ চলার পর পাকিস্থানী সেনারা বাঙালী যোদ্ধারের দাপটে পিঁছু হাটতে শুরু করলে বিজয়ের উল্লাসে মেতে ওঠেন মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় শত্রু হত্যার সাফল্যে উচ্ছ¡সিত হয়ে বাংলা মায়ের দামাল ছেলে গোলাম দস্তগীর টিটো সহযোদ্ধাদের নিষেধ উপেক্ষা করে গুলি করতে করতে সামনে এগিয়ে যেতে থাকে। হঠাৎ একঝাঁক বুলেটের আঘাত থামিয়ে দেয় কিশোর টিটোর প্রাণ। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে টিটোর সাহসী দেহ। টিটোর জীবনের বিনিময়ে শত্রুমুক্ত হয় সাভার-আশুলিয়া।

পরবর্তীতে শহীদ টিটোকে সমাহিত করা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন ডেইরি গেট এলাকায়। তার মহান এই আত্মত্যাগের কথা আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বরণ করে সাভারবাসী।

দিবসটিকে স্মরন করে প্রতিবছরই বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ শহীদ গোলাম মোহাম্মদ দস্তগীর টিটোর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নানা শ্রেণী পেশার লোকজন ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি শহীদ টিটোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।