আশুলিয়ায় বিপুল পরিমান ফেনসিডিলসহ আটক এক ও প্রাইভেটকার জব্দ; র‌্যাব ৪

আগের সংবাদ

সাভারে গল্ফ ক্লাবে এ্যাপেক্স কাপ গল্ফ টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত

পরের সংবাদ

আশুলিয়ায় গৃহবধূর স্পর্শকাতর স্থানে বর্বর নির্যাতন; দুই এএসআই প্রত্যাহার

হাসান ভূঁইয়া

প্রকাশিত :৮:২৩ অপরাহ্ণ, ০৬/১০/১৬

এক্সপ্রেস প্রতিবেদক:

আশুলিয়ার পশ্চিম গুমাইল এলাকায় ফারজানা (২১) এক গৃহবধূকে গোপন অঙ্গে মরিচ লাগিয়ে দেয় ও ঘরে আটকে রেখে শরীরের বিভিন্ন মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন করেছে পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলেও উদ্ধার করেনি গৃহবধূকে। হাতের কাছে পাষন্ড স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের পেয়েও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে অভিযোগ উঠেছে দুই সহকারী উপপরির্দশকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও গণমাধ্যম কর্মীদের তোরজোরে একদিন পর পুলিশ ঐ গৃহবধূকে উদ্ধার করে। আটক করা হয় পাষন্ড স্বামী ও তার বাবাকে।

এ ব্যাপারে গৃহবধূ ফারজানা(২১) বলেন, ৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে আশুলিয়ার পশ্চিম গুমাইল এলাকার আবদুল মোতালিবের ছেলে পোশাক কর্মী সোনা মিয়া(২৬) এর সাথে তার বিয়ে হয়। এই দম্পত্তির দেড় বছরের ছেলে রয়েছে।  প্রায়ই তার স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও ননদের প্ররোচনায় তাকে মারধর করতো। গত বুধবার দুপুরে বাসায় খাবারের সময় টিভি নিয়ে ননদের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তার ননদ ইয়ানুর তাকে মারধর করতে থাকে এবং তার দু’হাত কামড়িয়ে মাঁটিতে ফেলে দেয়। এসময় স্বামী সোনা মিয়া ফারজানাকে মারধর করে বিবস্ত্র করে গোপন অঙ্গে মরিচ দিয়ে নির্যাতন চালায়। তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা উদ্ধারে এগিয়ে আসলে শ্বশুর তাকে বেঁধে রাখার নির্দেশ দেন। পরে প্রতিবেশীরা বিষয়টি থানায় অবহিত করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে তাকে বাসা সংলগ্ন একটি ফার্মেসীতে চিকিৎসা দেয়। পরে পুলিশ তার শ্বশুরকে আটক করে গাড়িতে উঠালেও ছেড়ে দেয়। রাত ১টায়  প্রতিবেশি সেকান্দারের বাড়ির তার মেয়ের সাথে থাকার জিম্মায় রেখে পুলিশ চলে যায়। রাত ৩ টায় তার শ্বশুর ও তার স্বামী তাকে বাসায় নিয়ে দরজা আটকে রাখে। বোনের অসুস্থতার কথা বলে মুঠোফোনে ফারাজানার ভাইকে খবর দেয় তারা। ভাই আকতার হোসেন বোনের শুশুর বাড়িতে এসে বোনরে এই অবস্থার কথা আবারও আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফারজানার শ্বশুর ও তার স্বামীকে আটক করে।

এ দিকে ফারজানার শশুর ঘটনার রাতে আশুলিয়া থানার দুই সহকারী এএসআই জামিরুল ও রফিকুল ইসলামকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ১ লাখ টাকা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন।  বিষয়টি সুরাহার জন্য পুলিশের দুই এএসআইকে টাকা প্রদান করেছে বলে গতকাল দুপুরে থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ও উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। তবে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই এএসঅাইকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

ঘটনা সম্পর্কে নির্যাতিতার ভাই আকতার বলেন, প্রায়ই তার বোনকে পরিবারের সকলে মিলে মারধর করে এবং তার বোনকে নিয়ে যেতে বলে। বোনের এই বর্বর নির্যাতনের কথা শুনে থানায় মামলার দায়ের করি। নির্যাতিত গৃহবধূ বাংলাবাজার এলাকার হা-মীম পোশাক কারখানায় হেলপার পদে কাজ করেন। তার স্বামী সোনা মিয়া শিন শিন পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকুরি করেন।

ফারজানা ভোলা জেলার লালমোহন থানাধীন চরসখিনা গ্রামের মৃত্যু সাহানসাহ মাদবরের মেয়ে। তার শ্বশুর বাড়িও একই এলাকায়। বর্তমানে ফারজানার শ্বশুর মোতালিব আশুলিয়ার পশ্চিম গুমাইল এলাকায় একটি বাড়ি কিনে বসবাস করেন।

জানতে চাইলে থানার আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিনুল কাদির বলেন, গৃহবধূ ও পোশাক কর্মী ফারজানার বিষয়টি জানার সাথে সাথে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় তার শ্বশুর ও স্বামী সোনা মিয়াকে। তবে পুলিশের টাকা লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুই এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রমান পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।